Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
আজ মঙ্গলবার ১০ মুহররম পবিত্র আশুরা। মুসলিম বিশ্বে এ দিনটি ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি কাশীনাথপুরও বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে পালন করবে।
বিস্তারিত
আজ মঙ্গলবার ১০ মুহররম পবিত্র আশুরা। মুসলিম বিশ্বে এ দিনটি ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে পালন করবে।
প্রায় এক হাজার ৩৩২ বছর আগে ৬১ হিজরির ১০ মহররম ফোরাত নদীর তীরবর্তী কারবালা প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (রা.)। মুসলমানরা বিশ্বাস করেন, মুহররমের ১০ তারিখে আকাশ ও মাটি সৃষ্টি হয়।
আরবিতে আশারা মানে ১০। ১০ মহররম তাই আশুরা নামেই পরিচিত। কারবালার বেদনাদায়ক ইতিহাস ছাড়াও আশুরার সঙ্গে জড়িয়ে আছে আরও অনেক তৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, এ দিনেই পৃথিবীতে আদম (আঃ) আগমন করেন। নবী ইব্রাহিমের (আঃ) শত্রু ফেরাউনকে নীল নদে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। নূহ (আঃ)-এর নৌকা ঝড়ের কবল থেকে রক্ষা পায়। দাউদ (আঃ)-এর তাওবা কবুল হয়, রক্ষা পেয়েছিলেন নমরুদের অগ্নিকুণ্ড থেকে। আইয়ুব (আঃ) দূরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্ত ও সুস্থতা লাভ করেন। ইসাকে (আঃ) ঊর্ধ্বাকাশে আল্লাহর নির্দেশে এ দিনেই উঠিয়ে নেওয়া হয়।
এ দিন অর্থাৎ ১০ মহরম হজরত ইমাম হোসেন (রা.) এবং তার পরিবার ও অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন। হজরত মুয়াবিয়া (রা.) হযরত মুগীর (রা.) এর পরামর্শে নিজ পুত্র ইয়াজিদকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ ইমাম হুসাইনকে (রা.) চেয়েছিলেন। ইসলামী শরীয়ায় বংশানুক্রমিক শাসন হারাম, তাই ইয়াজিদের কাছে বাইয়্যাত (আনুগত্য স্বীকার) নিতে অস্বীকৃতি জানান ইমাম হুসাইন (রা.)।
ইয়াজিদের শাসনের প্রতিবাদে ইমাম হুসাইন রো.) মদীনা ছেড়ে মক্কায় চলে যান। পরে মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশ্যে হিজরত করেন। বাইয়্যাত নিতে বাধ্য করতে উমর ইবনে সাদ আবি ওক্কাসের নেতৃত্বে চার হাজার সৈন্য প্রেরণ করেন ইয়াজিদ। সৈন্যবাহিনী ইমাম হুসাইন (রা.) এর কাফেলাকে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে অবরোধ করে।
ইয়াজিদের সৈন্যদের অবরোধে ইমাম হুসাইন (সা.) শিবিরে খাদ্য ও পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। নারী-শিশু সবাই পানির জন্য কাতর হয়ে পড়েন। কিন্তু ইমাম হুসেইন (রা.) আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানান। অবশেষে হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম ইয়াজিদের বাহিনীর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন ইমাম হুসাইন (রা.)। অসম যুদ্ধে ইমাম হুসাইন (রা.) এবং তার ৭২ জন সঙ্গীসহ শাহাদাত বরণ করেন। শিমার ইবনে জিলজুশান নিজে কণ্ঠদেশে ছুরি চালিয়ে ইমাম হুসাইনকে (রা.) হত্যা করেন।
শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের সুমহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। কারবালার এই শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সকলকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে অনুপ্রেরণা যোগায়। সত্য ও সুন্দরের পথে চলার প্রেরণা যোগায়।
মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পবিত্র আশুরা পালিত হবে। আজ সরকারি ছুটির দিন।
কারবালার শোকের দিনের অনেক আগেই রাসূল (সা.) জীবদ্দশায় আশুরা দিনে রোজা রাখতেন। আবু হুরায়রা (সা.) হাদিসে বর্ণনা বলেন, ‘আমি রাসূলকে ১০ মহররম রোজা পালন করতে দেখেছি। আর বলতে শুনেছি রমজানের রোজা ছাড়া অন্য যে কোনো সময়ের রোজার চেয়ে উত্তম মহররমের রোজা।’
আশুরার দিনে সুন্নি মুসলমানরা রোজা রাখেন। তবে শিয়া সম্প্রদায় ক্রন্দন ও মাতমের মাধ্যমে ইমাম হুসাইন (রা.) এর শাহাদাতকে স্মরণ করে। শোক মিছিল তাজিয়ায় শরিক হয় শিয়া সম্প্রদায়। পুরাতন ঢাকার হোসেনী দালান এলাকা থেকে প্রতি বছরের মত এবারও আশুরা উপলক্ষে বের হবে তাজিয়া। মোহাম্মদপুর, পুরান ঢাকায় তার প্রস্তুতি চলছে সপ্তাহ ধরে। সতের শতক থেকেই ঢাকার তাজিয়া মিছিল বিখ্যাত।
এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে।
আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা আশুরার শিক্ষায় দেশ গড়ার আহ্বান জানান।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রচার করা হবে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে বিশেষ নিবন্ধ।
ছবি
ছবি
ডাউনলোড